যায়তুন তেল এর উপকারিতা ও ব্যবহার


যায়তুন একটি বরকতময় ফল। কেননা, আল্লাহ’তা-আলা সূরা ত্বীন এ যায়তুন এর কসম খেয়েছেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়তুনের তেল খেতে ও মালিশ করতে বলেছেন। তিনি বলেন:

كلوا الزيت وادهنوا به فإنه من شجرة مباركة

“তোমরা যায়তুনের তেল খাও এবং এর দ্বারা মালিশ কর বা শরীরে মাখ। কেননা, এটা বরকতময় গাছ থেকে আসে।”(তিরমিযী, আহমদ, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন)

ইসলাম ধর্মেও যায়তুন তেল খাওয়া এবং ব্যাবহারের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহর রসূলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা এই তেলটি খাও, তা শরীরে মাখাও।”

[হযরত আবু হুরাইরা (রদ্বি.) হতে তিরমিযি ও ইবনে মাজাহ্ বর্ণনা করছেন । ইবনে মাজাহ্-এ হাদিস নং ৩৩২০ । সনদ সহীহ্]

যায়তুন তেল যে কোষ্ঠ কাঠিন্য কমে, তা ইবনুল কাইয়্যূম তার “The Medicine of the Prophet (sm.)” বইয়ে তা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন । অলিভ বা যায়তুন থেকে যে তেল তৈরি করা হয়,তাকে অলিভ অয়েল বা যায়তুন তেল বলে। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যায়তুন তেলের উপকারিতা অনস্বীকার্য । এই তেলে ওমেগা ৬ এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি আ্যাসিড রয়েছে। একইসঙ্গে এতে এক প্রকারের স্বাস্থ্যকর মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে যার নাম এলিক আ্যাসিড। তাই বিশেষজ্ঞরা সাধারণ তেলের বিকল্প হিসেবে এটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যায়তুনের তেলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে, যেগুলো আল্লাহর অনুগ্রহে আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখে। একটি গবেষণা অনুযায়ী এই তেলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি আটকানোর গুণাগুণ রয়েছে। এতে থাকা এলিক আ্যাসিড প্রাকৃতিক প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে।


যায়তুন বা অলিভ অয়েল উপকারিতা ও  ব্যবহার

রূপচর্চায় যায়তুন তেল

রূপচর্চায় যায়তুন তেলের বহুল ব্যবহার পরিলক্ষিত। আধুনিক রূপচর্চায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। নীচে এর কয়েকটি ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

চুলের যত্বে যায়তুন তেল

যখন চুলের প্রশ্ন আসে তখন আমরা অনেকেই আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততার কারণে একে অগ্রাহ্য করি। তবে যায়তুন তেলে থাকা শক্তিশালী উপাদান আমাদের চুলকে আরো দৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। 


মুখের যত্বে যায়তুন তেল

যায়তুন তেল আমাদের কাছে একটি পরিচিত খাওয়ার তেল, তবে এটি আমাদের মুখের জন্যেও সমান উপকারী হতে পারে। এই তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের মুখের জন্য একটি ভালো ময়েশ্চারাইজেশন ও অ্যান্টি এজিং হিসেবে কাজ করে। প্রায়সই মুখ ধোয়ার বিভিন্ন পণ্যের উপাদান হিসেবে এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যেমন:- সাবান, বডি ওয়াশ এবং লোশনেও পাওয়া যায়।

ত্বকের যত্বে যায়তুন তেল

যায়তুন তেল সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে কোনো অতিরিক্ত উপাদান ছাড়াই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অতিরিক্ত তেলকে মুছে ফেলতে তোয়ালে বা পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মুখের ব্রণ প্রতিরোধক হিসেবেও কার্যকরী। এজন্য ৪ টেবিল চামচ লবণের সাথে ৩ টেবিল চামচ যায়তুনের তেল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে এই পেস্ট ২ মিনিট ধরে মুখে ম্যাসাজ করে ধূয়ে ফেলতে হবে । পরিমিত পরিমাণ এবং বিশুদ্ধ যায়তুন তেল ত্বকের জন্য দুর্দান্ত কার্যকর । এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং পলিফেনলসের কারণে কোষের পুনর্জন্মের পরিমাণ বাড়ে। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক স্থিতিস্থাপক বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তবে সবধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে এটি সমান উপকারী নাও হয়ে উঠতে পারে, তাই একজন বিশেষজ্ঞ চর্ম চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।  নীচে এর ব্যবহার সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেওয়া হলো:



যায়তুন তেল স্বাস্থ্যকর তেলের মধ্যে জন্যপ্রিয় ও উপকারি। বেশকিছু গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী এটিতে অবিশ্বাস্য পরিমাণ স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে। যায়তুন তেলের উপকারিতা সমূহের মধ্যে রোগ ও অসুস্থতা প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ত্বকের উন্নতি এবং এমনকি শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি অন্যতম।